Tuesday, August 20, 2013

হিন্দী সিরিয়াল থেকে শেখা পদ্ধতিতে বাবা-মাকে খুন করেছে


বাবা-মাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা!!!! শুনলেই আঁতকে ওঠে ভিতরটা।এমন হত্যা নিয়ে চলছে নানান জল্পনা-কল্পনা। তারপর
আবার দক্ষ হাতে সুনিপুণ কথাবার্তা। বখে যাওয়া ঐশী তার বাবা-মাকে হত্যার আগেই ‘সুইসাইডাল’ নোট লিখে যায়। কিন্তু
আসলেই কি ‘সুইসাইডাল’ নোটটা তার লেখা। এ নিয়ে চলছে এখন নানান সমালোচনা। ঐশী তার জন্মদাতা বাবা-মাকে খুন
করে হিন্দী সিরিয়াল থেকে শেখা পদ্ধতিতে। তার লেখা স্কুলের খাতার ১২ পৃষ্ঠা জুড়ে সুইসাইডাল নোটে উঠে এসেছে মনের
একান্ত কিছু কথা। সে বলেছে, তার বাবা-মা তাকে বোঝার চেষ্টা করেনি কখনো। তারা দোষ-ত্রুটি খুঁজে বের করেছে কিন্তু
ভালো দিকগুলো দেখার চেষ্টা করেনি কখনো।

বছর দুয়েক আগে বখে যায় ঐশী; কিন্তু তার বাবা-মা বিষয়টা বুঝতে পারেন মাত্র মাস তিনেক আগে। সেই থেকে বাসার
বাইরে যাওয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। এই বখে যাওয়া ঐশী ডিজে পার্টির বন্ধুদের সঙ্গে ইয়াবা আর গাঁজা সেবন করে রঙিন দুনিয়ায়
বিচরণ করত। তাই বাবা-মায়ের শাসনকে তার মনে হতো রঙিন দুনিয়ার সবচেয়ে বড় বাধা। বাবা-
মা বেঁচে থাকলে স্বাধীনভাবে কোন কিছুই করা তার পক্ষে সম্ভব হবে না। তাই সে তাদের চিরতরে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
অবশ্য এর আগে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সে। তাই তার পড়ার খাতার ১২ পৃষ্ঠা জুড়ে লিখেছিল সুইসাইডাল নোট!
খাতাটি এখন গোয়েন্দার হাতে। সেখানেই পাওয়া গেল তার আত্মহত্যার ইচ্ছা আর বাবা-মায়ের উপর ক্ষোভের কারণ।
তবে চিঠিটি সে নির্দিষ্ট কাউকে উদ্দেশ করে লেখেনি। ভেবে নিয়েছে নিশ্চয়ই কেউ পড়বে সেটা। যে পড়বে তাকেই উদ্দেশ
করে লিখেছে সে।

কিন্তু এটি অতি দক্ষ হাতে সুনিপুনভাবে লেখা চিঠি। একজন ইংলিশ মিডিয়ামের মাদকাসক্ত ছাত্রী হয়ে কিভাবে লিখলেন এমন
গুছালো মার্জিত ভাষার চিঠি? এ নিয়ে এখন সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুক, টুইটার, ব্লগ ও অনলাইন নিউজগুলোতে চলছে নানান
সমালোচনা।

এপর্যন্ত যা কিছু ঘটে গেল ঐশীকে নিয়ে তারই প্রেক্ষিতে বলা যায়, এই অনাকাঙ্খিত ঘটানার জন্য দোষ কি শুধু ঐশীর? ঐশীর
চেয়ে বড় দোষী তার পরিবার। আবার ঐ পরিবারের চেয়ে বড় দোষী কিছু উচ্চবিত্তদের সমাজ। আর যে সমাজে ঐশীদের বলা হয়
খাঁটি বাঙালী ও স্মার্ট গার্ল।

দিনের বেলায় মেয়েকে ৫২০০০ টাকা দিয়ে কিনে দেওয়া সানিলিওন ড্রেস পরিয়ে বন্ধুদের
সাথে বেলেল্লামীপনা করতে পাঠাচ্ছেন বাবা-মা হাসিমুখে আর রাতের বেলায় বন্ধুদের নিয়ে এসে নিজ বাসাতেই রাত্রী যাপন
করছে পরিবারের সামনেই। এতটুকু যেন শাসন নেই এই পরিবারে। আর বখে যাওয়ার শেষ মুহুর্তে এসে শাসন!! লাভ
নেই……..এতো দিনে আপনারাই আপনার মেয়েকে বটি দিয়ে কুপিয়ে মারার সাহস যুগিয়ে দিয়েছেন।

ঐশীকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে… স্বাভাবিকভাবেই পুলিশের গুতোনি খেয়ে ঐশী সত্য-মিথ্যা মিশ্রিত করে গড়গড়
করে বলে দেবে। সত্য বলবে পুলিশের মার থেকে বাঁচার জন্য আর মিথ্যা বলবে পরবর্তিতে নিজে বাচাঁর জন্য। এ যেন এপার-
ওপার বাঁচার লড়াই। কিন্তু একটা জিনিস খুবই স্বাভাবিক। ঐশীর গায়ে যখন পুলিশ হাত তুলবে সে তখন কাঁন্না করবে, চিৎকার
দিবে। তবে এই চিৎকারটা মা..মা ..মা.. বলেই তো দেবে. তাই নয় কি?

আর যদি মা…মা…মা নাও বলে তবে বাবা…বাবা…বাবা গো বাঁচাও বলে চিৎকার দিবে। তবে আমি জানি না ঐশী কেন
বাবা..বাবা বা মা…মা বলে চিৎকার দিবে।. কারন ঐশীতো মাদকাসক্ত। আর মাদকাসক্তরা আদর করে ফেনসিডিলকে “ডাইল” আর
ইয়াবাকে “বাবা” বলে ডাকে …যতদূর জানি।

যাকেই ডাকুক, সে যে জঘন্য কাজটা করেছে সেটা বাংলাদেশে কেন, বিশ্বের ইতিহাসে খুব কমই আছে।
আঘাত পেলে যে জাতির মুখ দিয়ে অটোমেটিক্যালি “মা গো” বলে ডাকা বের হয়ে আসে তার জন্য শুধু নেশার জন্য বাবা-
মাকে খুন করা মোটেও সহজ ব্যাপার না।

এখানে, এক তরফা ভাবে ‘সমাজকে’ বা তার ‘বাবা-মার উদাসিনতাকে’ বা ‘সন্তান হিসেবে তার নৈতিকতাকে’
দায়ি করে থেমে গেলে কিন্তু সেটা হবে আগামী প্রজন্মের জন্য, আমাদের করা একটা মস্ত বড় ভুল।
তাই দরকার সচেতনতা। আর এ সচেতনতা মা-বাবা থেকে শুরু করে পরিবার, সমাজ সবার মাঝে। পারিবারিক বন্ধন অটুট রাখুন,
প্রত্যেক মা-বাবার মধ্যে সম্পর্ক যেন খারাপ না হয় সেদিকে নজর রাখুন-কারন এর প্রভাব আপনার সন্তানের উপরই পড়বে।

সন্তানকে বোঝার চেষ্টা করুন, সন্তানকে সময় দিন, সন্তান যখন আজে বাজে কাজ করতে শুরু করে প্রথামিকভাবে তাদের শাসন
করুন। সন্তানের বন্ধুদের খোঁজ-খবর নিন,আপনার সন্তান কার সাথে মেলামেশা করে খেয়াল করুন, সন্তানদের ভালো মন্দ যথাযত ভাবে মূল্যায়ণ করুন। —

Post By- Tushar (Admin)